সতীত্ব নিয়ে “রামায়ণে” একটি অগ্নিপরীক্ষার কথা বলা আছে। শ্রী রাম চন্দ্রের স্ত্রী সীতাকে আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে তার সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। সেই মহাপরীক্ষায় সীতা জয়ী ও হয়েছিলেন। সীতা আগুনে পুড়ে মারা যাননি।

এই ধরনের একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ঘটেছিল ফ্রান্সে । ফ্রান্স এর রাজা চার্লস ডি ফাত / তৃতীয় চার্লস (King Charles the Fat : 839-888) তাঁর রানীকে অগ্নিপরীক্ষা করেছিলেন।

রাজা লুইসের ছিল বিচিত্র খেয়াল। তাঁর মাথায় সহসা এক সময় খেয়াল চাপল যে তাঁর রানী রিচার্ডিস (Richardis of Swabia (c840-c895) ) সতী কি না টা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সহসাই তাঁর মনে হয়েছিল রানী রিচার্ড হয়তো অসতী। তাই রানী  তাঁর সতীত্ব এর পরীক্ষা দিতে হবে।

কিন্তু এই পরীক্ষা যেমন ছিল বিচিত্র তেমনি ছিল ভয়ঙ্করও। পরীক্ষার শর্ত ছিল, সামনে জ্বেলে দেয়া হবে প্রকাণ্ড অগ্নিকুণ্ড , রানীকে সেই প্রজ্বলিত আগুনের মাঝ খান দিয়েই হেঁটে যেতে হবে। যদি তাতে আগুন রানীকে স্পর্শ না করে তবে প্রমানিত হবে রানী নিষ্পাপ। তিনি সতী নারী। আর যদি অসতী হন তবে নির্ঘাত আগুনে পুড়ে মারা যাবেন।

অবশেষে তারই আয়োজন করা হল। জ্বেলে দেয়া হলো আগুনের কুণ্ড। রানী কে পরিয়ে দেয়া হলো মোম মাখানো গাউন। রানী ঈশ্বরকে স্মরণ করতে করতে সেই দাউ দাউ করে জ্বলে উঠা আগুনের মধ্যে দিয়ে হেঁটে গেলেন। পার হলেন আগুনের কুণ্ড। অবাক কাণ্ড! আগুন তাঁর শরীর স্পর্শও করল না। তাঁর শরীরে আগুনের এতটুকও আঁচড় লাগল না!

অতঃপর রাজাও রানীর সতীত্বের পরীক্ষায় খুশি হলেন। তিনি রানীকে আদর করে ঘরে তুলে নিতে চাইলেন।

কিন্তু এখানেই ব্যাপার ঘটল ভিন্ন রকম। অগ্নিপরীক্ষায় জিতেও রানী আর ফিরে গেলেন না রাজপ্রাসাদে, রাজার কাছে। তিনি রাজসুখ বিসর্জন দিয়ে প্রবেশ করলেন গির্জায়। বেছে নিলেন সন্ন্যাস জীবন।

সারা জীবন ঈশ্বরের আরাধনায় কাটালেন সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি। কারন এই অগ্নিপরীক্ষায় যাবার আগে তিনি এমন করে আত্ননিবেদিত ভাবে ঈশ্বরকে ডেকে ছিলেন যে তিনি প্রায় বাহ্য জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ে ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন ঈশ্বরই তাকে রক্ষা করবেন মহাবিপদ থেকে। তাহলে ঈশ্বরই হলো জগতের সব কিছুর উপরে। পার্থিব সুখ কিছু না। তাই তিনি এবার সর্বাত্মক ভাবেই নিজেকে নিবেদন করলেন ঈশ্বর এর আরাধানায় ও সেবায়। পৃথিবীর রাজকীয় বিলাস ও সুখের প্রতি মোহ কেটে গেছে।

 

সুত্রঃ রিপ্লিস বিলিভ ওর নট ।